বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার, মোঃ ফুল মিয়া (কুলঞ্জ) দিরাই: শুধুমাত্র ইচ্ছা শক্তি থাকলে অনেক অসাধ্যকে সাধন করা যে সম্ভব, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দিরাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন। নিজেদের খুব বেশি সামর্থ না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ এক কিলোমিটার রাস্তায় মাটি ভরাট করে রেকর্ড সৃষ্টি করলেন। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামের শ্যামনগর পাড়াটি অতিদরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া হাজার খানেক মানুষের বাস।
জানা যায়, কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের শ্যামনগর পাড়াটি নানা ধরণের অবহেলার শিকার হয়ে আসায় অবশেষে তারাই নিজ উদ্যোগে চলাচলের রাস্তাটি নির্মাণ করতে উদ্যোগী হয়। এ উপলক্ষ্যে তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেন নিজ সামর্থ অনুযায়ি এগিয়ে আসার জন্য। স্থানীয় কর্তা ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়েও কোন ফলাফল তারা পাননি বলেও অভিযোগ আছে। কিন্ত এই পাড়ার কিছু লোক উদ্যোগ নেন তারা নিজেরাই তৈরি করবেন তাদের নিজস্ব রাস্তা। পাড়ার সবাই বসে সিদ্বান্ত নেন তারা নিজেরাই বহন করবে সড়কের ব্যয় বাবদ প্রায় সাত লাখ টাকা। অভিযোগ আছে, আদিকালের ঘোপাট ছিল চলাচলের একমাত্র রাস্তার জন্য অনেক আবেদন-নিবেদন করার পরও জনপ্রতিনিধি বা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে তাদের যাতায়াতের জন্য কোন রাস্তা বা সড়ক তৈরির কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
এ পাড়ার অধিকাংশ লোকজনই গরীব ও অসহায় হওয়ায় অবশেষে কেহ চাঁদা তুলে কেহবা চাঁদা দিয়ে কেউবা নিজের সম্পদ লিজ দিয়ে রাস্তা তৈরির উদ্যোগী হন। অনেক বাঁধা বিপত্তি ডিঙিয়ে প্রায় সাত লাখ টাকার জোগান দিয়ে অবশেষে ৮ হাত উচ্চতা সম্পন্ন ও ১২ হাত প্রস্ত এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ সমাপ্ত করলেন। শ্যামনগর গ্রামবাসির এই ‘একতার’ ফসল রাস্তা তৈরিতে এলাকার মানুষের মধ্যে স্ব উদ্যোগের মনোভাব বাড়বে বলে মনে করেন অনেকেই।
কুলঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মুজিবুর রহমান জানান, এই রাস্তার ব্যাপারে আমরা অবগত আছি, যদিও এই সড়ক নির্মাণে পরিষদের পক্ষ থেকে কোন বাজেট দেয়া হয়নি, তদুপরি তাদেরকে আমি আশ্বস্ত করেছি, আগামিতে বরাদ্ধ পেলে সড়কটিকে পাকা করে দেব। তিনি জানান, গ্রামের পাশে একটি খাল রয়েছে, সেটি তারা লিজ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। গ্রামবাসির স্ব উদ্যোগে এই সড়কটি নির্মাণ করা জন্য তিনি তাদেরকে ধন্যবাদও জানান।